আশুলিয়া প্রতিনিধিঃ
রাজধানী ঢাকা ও পাশবর্তী জেলা গাজীপুর সন্নিকটে আশুলিয়া অবস্থান আর তাই একটা সময় সন্ত্রাসী গডফাদার জঙ্গি আর মাদক ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আস্তানা ছিল এই আশুলিয়া। লক্ষ লক্ষ লোকের বাস শিল্পাঞ্চালখ্যাত এই অঞ্চলে। দেশের বিভিন্ন জেলা হতে আসা মানুষ জন নানা ধরণের জীবিকা নির্বাহ করছে এই জনপদে। তাই তো হত্যা ধর্ষণ মাদক ব্যবসা নানা রকম প্রতারণা তার উপর শত শত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে কারণে অকারণে আন্দোলনের নামে অসহিষ্ণু পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা এখানে ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যপার।
আর নানা সমস্যায় জর্জরিত অবস্থায় আশুলিয়ার পাশ্ববর্তী ধামরাই থানা থেকে বদলী হয়ে আশুলিয়ায় আসেন শেখ মোঃ রেজাউল হক দিপু।
১৯৭৭ সালের ১৭ই নভেম্বর গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার পূন্যভূমির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন রিজাউল হক দিপু। তার ডাক নাম দিপু। পিতা মরহুম শেখ ইকরামুল হক। তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গানম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন এবং সর্বশেষ গত ২ রা সেপ্টেম্বর ২০১৮ইং সালে আশুলিয়া থানায় যোগদান করেন।
আশুলিয়া থানায় যোগদানের পরেই নিজের বুদ্ধিমত্তা আর আক্লান্ত পরিশ্রমে প্রায় মাদকমুক্ত ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি লাভ করে।
সম্প্রতি নানা কারনে বেশ আলোচিত ও সব শ্রেণীর মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে থানায় জিডি করতে কোন টাকা লাগে না বলে থানার দেয়ালে সাটানো প্রজ্ঞাপন দেখে মুগ্ধ নানা অসুবিধায় পড়া মানুষগুলো।
এতে বেশ সুনাম-সুখ্যাতিও কুড়িয়েছেন তিনি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে গোটা দেশবাসীর নজরে পড়েন এই কীর্তিমান পুলিশ অফিসার । আশুলিয়ার সর্বত্র বাসা বাড়ী ও হাট-বাজারে চুরি-ডাকাতি এবং কিশোর-যুবকদের বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ড বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি প্রতিনিয়ত।
সব মিলিয়ে ওসি শেখ মোঃ রিজাউল হক দিপু বেশ কিছু সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত এখন প্রায় মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত আশুলিয়ায় রুপান্তরিত হওয়ার সন্নিকটে।
যোগদানের শুরু থেকেই মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তার জেহাদ চলছে। অতিতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে আশুলিয়া থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত।
জানা গেছে, আশুলিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে তার চৌকস অফিসারদের নিয়ে রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করে,নিজের সাহসী পদক্ষেপ আর কৌশলে আশুলিয়ায় মাদকপাচার, জাল টাকা ব্যবসায়ী, অস্ত্র ব্যবসায়ী , চোর, দুর্ধর্ষ ডাকাত দল, বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারীকে গ্রেপ্তারে বিশেষ অবদান রেখেছেন। যার ফলে স্থানীয় থানা ও পুলিশ বিভাগের প্রতি জনগনের স্বস্তি ও বিশ্বাসের জায়গা সৃষ্টি হয়েছে। ইতিপূর্বে আশুলিয়ায় অন্য কেউ এমন বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে,ওসি শেখ মোঃ রিজাউল হক দিপু এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তিনি এ থানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ কারণে ক্রমশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে বলে জনগনের দাবী। তাছাড়া, একাধিক ভুমিদূস্যতা, দখল-বেদখল, মাদক ব্যবসা, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি সহ আইন-শৃংখলা পরিপন্থী কার্যক্রম রাখায়, পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি ।
ঘুষ দূর্নীতি এমনকি আশুলিয়া থানা এলাকার এক শ্রেনীর দালাল চক্রের প্রভাবকে গুড়িয়ে দিয়ে সাধারণ জনগনের আস্থা ফিরিয়ে আনেন।
এসবই মাত্র কয়েক মাসে অর্জন করতে পেরেছেন নিজের সততা আর কর্ম স্পৃহার গুনে,পুলিশ জনগণের বন্ধু, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব বিশেষত্ব পুলিশের।
আশুলিয়াবাসীর অনেকেই বলছেন, ওসি শেখ মোঃ রিজাউল হক দিপু যোগদান করার পর চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসাবে সুপরিচিত হয়েছেন। অতি সল্প সময়ে অপরাধ দমনে তার ভূমিকা সর্বমহলে বেশ আলোচিত ও প্রশংশিত হয়েছে।
আশুলিয়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে
বাল্যবিবাহ, মাদক ও তথ্য- প্রযুক্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে প্রায়ই তাকে সচেতনমূলক আলোচনা সভা করতে দেখা গেছে।
উপজেলা রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা তাকে নি:স্বার্থ সহায়তা করায় অদ্যবধি বড় ধরনের কোন রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা মামলার ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কোন নেতাকর্মীদের হয়রানি না করায় তাদের মধ্যে এখনও সৌহার্দ্যপূণ্য বসবাস রয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বিগত অনেক বছরের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ ভালো রয়েছে। আগের তুলনায় মাদক ও সন্ত্রাস অনেকটা নির্মূল হয়েছে। ওসি শেখ মোঃ রিজাউল হক দিপু যোগদান করার পর থেকে শিল্পাঞ্চলখ্যাত আশুলিয়ার মানুষ চুরি-ডাকাতির ভয় ছেড়ে খুব স্বস্তিতে আছে। তারা বলেন, ওসি’র কঠোর অবস্থানের কারনে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও রাঘববোয়াল চাঁদাবাজরা সটকে পড়তে বাধ্য হয়েছে। স্থানীয় সুশীল সমাজের ধারনা মতে সম্প্রতি সময়ে বিভিন্ন উপজেলার তুলনায় আশুলিয়ার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি সিথিল রয়েছে।
জানা গেছে, আশুলিয়া থানার ওসি কর্মজীবনে একজন সফল মানুষ। তিনি তার যোগ্যতা আর দক্ষতার বলে অত্র অঞ্চলের সচেতন ও সাধারণ এলাকাবাসীর মন জয় করেছেন। সেই সাথে একজন সফল ওসি হিসেবে যত গুণাবলী প্রয়োজন তা তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।
আশুলিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে থানা এলাকা থেকে টাউট-বাটপার ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হয়েছে। পুলিশী সেবা গ্রহীতাদের এখন আর দূর্ভোগ পোহাতে হয় না। মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানেও সফল হয়েছেন । ধনী-গরীব সবার জন্য ওসির দরজা সব সময় উন্মোক্ত করেছেন তিনি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ সকল অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভুমিকা পালন করছেন ।
সার্বিক বিষয় নিয়ে এই প্রতিবেদককে ওসি শেখ মোঃ রিজাউল হক দিপু বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে শিল্পাঞ্চলখ্যাত এই আশুলিয়ায় বসবাসরত বিভিন্ন জেলা হতে আগত অত্র অঞ্চলে কর্মরত ঘরমুখো মানুষ যাতে বাড়ী গিয়ে ঈদ উৎসব পালন করে আবার নির্বিগ্নে ফিরে এসে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারে তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পুলিশকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে পাশাপাশি এ সময় মলমপার্টির সক্রিয়তা রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন ঈদের সময় যদি কেহ মোটা অংকের টাকা বহন করতে চান সেক্ষেত্রে পুলিশের সহয়তা নিতে পারেন। এবং বাসে যাত্রী সাধারণ অপরিচিত লোকের দেয়া কোন কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে পরিবহনে যাতায়াত করবেন না। বাসা থেকে বের হবার পূর্বে লক বা তালা চেক করুন।
চলন্ত পথে আশুলিয়া অবস্থান কালে আপনার যে কোন সমস্যায় আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করুন।
তিনি আরো বলেন, মানুষের সেবা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। ওসি হিসেবে যতদিন কর্মরত আছি, ততদিন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিরলস ভাবে আমার দায়িত্ব পালন করবো। যাতে করে মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে ও স্বস্তিতে থাকতে পারেন। তিনি আরো বলেন, আমি মানবতা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। কেউ যদি কোথাও সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই করে আর সে ঘটনা যদি
পুলিশকে জানানো হয় তাহলে তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রেখে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে, অপরাধ দমনের পাশাপাশি আশুলিয়াকে মাদক মুক্ত করার প্রত্যয়ে পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সাথে জড়িতদের সমাজ থেকে নির্মুল করা হবে। মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ছাড় পাবে না সন্ত্রাসীরাও। সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান অব্যহত থাকবে। তিনি অপরাধ দমনে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান।
এসময় তিনি আরো বলেন, আমার অধিনস্থ কোন অফিসার বা সদস্য কোন অপকর্ম করছে বলে প্রমানিত হলে আমাকে জানালে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0 Comments